পানপাতার বিভিন্ন গুনাগুন।
আমাদের দেশে মুরুব্বিদের কাছে পানপাতা বেশ বেশ জরুরি। গ্রামের বাড়িতে দাদি-নানিরা রাতের খাওয়া শেষে ঘরের দাওয়ায় বসে আয়েশ করে পান চিবুতে চিবুতে নাতি-নাতনিদেরকে গল্প শোনাচ্ছেন এমন মধুর দৃশ্যকল্পের সাথে আমরা সবাই পরিচিত। বিয়েসহ যে-কোনো অনুষ্ঠানে মূল ভোজপর্বের পর পানের আয়োজন নেই এমনটা কল্পনা করাই দুঃসাধ্য।
তবে আজ বরং পানের অন্যরকম ব্যবহার নিয়েই কথা বলা যাক। আর তা হলো পানের ঔষধি গুণ। রোগ সারানোর ক্ষেত্রে পানের ব্যবহারের তালিকা দেখে আপনি এই হৃদয়াকৃতির পাতাটিকে সর্বরোগের ওষুধও বলতে পারেন। চলুন তবে তালিকাটা দেখা যাক-
ব্যথা ও জীবাণুনাশক
কাটাছেঁড়াসহ যে-কোনো আঘাতের ব্যথানাশক হিসেবে পানের রস খুবই কার্যকরী। পানপাতার সামান্য পেস্ট ক্ষতস্থানে লাগান। সাথে সাথে আপনার ব্যথাকে বিদায় করতে লেগে যাবে পানের রস। এছাড়াও দেহাভ্যন্তরে যে-কোনো ব্যথা অনুভব করলে পানপাতা চিবিয়ে রসটুকু গিলে ফেলুন। টনিকের মতো কাজ করবে। আর পলিফেনল এবং শাভিকলের মতো জীবাণুনাশক উপাদানসমৃদ্ধ হওয়ায় পানের রস ক্ষতস্থানকে রাখবে সংক্রমণমুক্ত।
কোষ্ঠকাঠিন্য, বদহজম ও ক্ষুধামন্দা নিরাময়ে
কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত ভোরে খালিপেটে পানের রস পান করুন। কিংবা আগের রাতে পানপাতা কুচি কুচি করে কেটে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন এবং পরদিন ভোরে সেই পানি পান করুন।
হজমশক্তি বৃদ্ধিতেও পানের গুণ সর্বজনবিদিত। খাওয়ার পর পান চিবোনোর প্রচলন মূলত সে-কারণেই এসেছে। এছাড়া গ্রামে অনেকে শিশুদের বদহজম দূর করতে পানের ওপর শর্ষে তেল মাখিয়ে পেটের ওপর মালিশ করে। এতে ধীরে ধীরে পেটের অ্যাসিডিটি স্বাভাবিক পর্যায়ে আসে এবং পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কার হয়। আবার পানপাতার সাথে সামান্য কাঁচামরিচ মিশিয়ে সিদ্ধ করে সেই মিশ্রণটি ছেঁকে পান করলেও বদহজমের রোগীরা সুফল পাবেন।
মুখের সমস্যায়
পানের রসে রয়েছে দাঁতের মাড়িকে মজবুত করার উপাদান। কুসুম গরম পানিতে দু’তিন ফোঁটা পানের রস মিশিয়ে কিংবা সরাসরি পানপাতাকে সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে সকাল-সন্ধ্যা কুলি করতে পারেন। পানের রস মুখের ভেতর থাকা জীবাণু এবং ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে নিশ্বাস সজীব করে তোলে। এছাড়াও মুখের যে-কোনো ক্ষত সারানোতেও বেশ কার্যকর পানের রস।
ফুসফুসের ব্যামো সারাতে
কাশি এবং শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তি পেতেও সাহায্য করবে পান। পানপাতায় শর্ষে তেল মেখে সেটি খানিকটা আগুনের ওপর সেকে নিয়ে বুকে মালিশ করলে শ্বাসকষ্টের রোগীরা বেশ ফল পাবেন। আবার দারুচিনি, এলাচ, গোলমরিচ, লবঙ্গ এবং পানপাতা একসাথে দুই কাপ পানিতে ভালো করে সিদ্ধ করে সেই পানি ছেঁকে পান করলেও কাশি এবং শ্বাসকষ্ট অনেকটাই সেরে যাবে।
কোমরের ব্যথা উপশমে
কোমরের ব্যথা উপশম করার ক্ষেত্রেও রয়েছে পানপাতার কার্যকারিতা। পানপাতা পেস্ট করে তার সাথে নারকেল তেল মিশিয়ে গরম করে কোমরে মালিশ করলে দারুণ ফল পাওয়া যায়।
মূত্রসংক্রান্ত সমস্যায়
যাদের প্রসাব করতে কষ্ট পোহাতে হয় তাদের জন্যও রয়েছে পানপাতার ওষুধ। পানপাতার রস দুধের সাথে মিশিয়ে পান করলে তা মুত্র পরিষ্কারকের কাজ করে।
ক্লান্তি এবং অবসাদ দূরীকরণে
ক্লান্ত-অবসন্ন হয়ে শরীরে ঘুম ঘুম ভাব চলে এলে পান করতে পারেন পানপাতার রসের সাথে মধুর মিশ্রণ। এতে শরীর চাঙা হয়ে পূর্ণোদ্যমে কাজ করার স্পৃহা ফিরে পাবেন।
মাথাব্যথা
মাথাব্যথা উপশমের ক্ষেত্রেও পানপাতা কাজ করে টনিকের মতো। মাথাব্যথা হলে একটি পানপাতা আপনার কপালে লাগিয়ে রাখতে পারেন। কিংবা পানপাতার পেস্ট বানিয়ে সেটিও কপালে মাখতে পারেন। কাজে দেবে।
এলার্জি, ব্রণ কিংবা খোসপাঁচড়া দূর করতে
এলার্জি, ব্রণ কিংবা খোসপাঁচড়া হলে আক্রান্ত স্থানে পানপাতার পেস্টের সাথে কাঁচা হলুদ বেটে প্রলেপ লাগাতে পারেন। এ দু’য়ের মিশ্রণ ধীরে ধীরে আপনার ত্বকের এ ধরনের বিশ্রী অসুখ সারিয়ে তুলবে।
কানের ব্যথা
কানের ব্যথা দূর করতে হলে পানপাতার রসের সাথে নারকেল তেলের মিশ্রণ বানিয়ে দু’ফোঁটা ঢেলে দিলে সুফল পাবেন।
যোনিপথে ঘা কিংবা চুলকানির ক্ষেত্রে
অনেক নারীই যথেষ্ট পরিচ্ছন্ন থাকার পরও যোনিপথে ঘা কিংবা চুলকানির মতো সমস্যার সম্মুখীন হন। তাদের জন্যও পানপাতা হতে পারে দারুণ নিরামক। পানপাতা সিদ্ধ করা কুসুম গরম পানি দিয়ে যোনীপথ পরিষ্কার করলে অস্বস্তিকর এ রোগ ভালো হয়। এছাড়াও স্বাভাবিক ঋতুকালীন সময়ে কিংবা সন্তান জন্মদানের পরও এই পানি দিয়ে যোনিপথ নিয়মিত পরিষ্কার করলে জীবাণুর সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
সতর্কতা : পানপাতার এতসব গুণ দেখে আবার নিয়মিত চুন, সুপারি, জর্দ্দা, খয়ের সহযোগে পানের সমঝদার বনে যাবেন না যেন! এতে হিতে-বিপরীত হবে। বিশেষ করে চুন এবং জর্দ্দা, খয়েরের মতো তামাকজাত দ্রব্যগুলো আপনার শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
-সাজ্জাদুর রহমান
তবে আজ বরং পানের অন্যরকম ব্যবহার নিয়েই কথা বলা যাক। আর তা হলো পানের ঔষধি গুণ। রোগ সারানোর ক্ষেত্রে পানের ব্যবহারের তালিকা দেখে আপনি এই হৃদয়াকৃতির পাতাটিকে সর্বরোগের ওষুধও বলতে পারেন। চলুন তবে তালিকাটা দেখা যাক-
ব্যথা ও জীবাণুনাশক
কাটাছেঁড়াসহ যে-কোনো আঘাতের ব্যথানাশক হিসেবে পানের রস খুবই কার্যকরী। পানপাতার সামান্য পেস্ট ক্ষতস্থানে লাগান। সাথে সাথে আপনার ব্যথাকে বিদায় করতে লেগে যাবে পানের রস। এছাড়াও দেহাভ্যন্তরে যে-কোনো ব্যথা অনুভব করলে পানপাতা চিবিয়ে রসটুকু গিলে ফেলুন। টনিকের মতো কাজ করবে। আর পলিফেনল এবং শাভিকলের মতো জীবাণুনাশক উপাদানসমৃদ্ধ হওয়ায় পানের রস ক্ষতস্থানকে রাখবে সংক্রমণমুক্ত।
কোষ্ঠকাঠিন্য, বদহজম ও ক্ষুধামন্দা নিরাময়ে
কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত ভোরে খালিপেটে পানের রস পান করুন। কিংবা আগের রাতে পানপাতা কুচি কুচি করে কেটে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন এবং পরদিন ভোরে সেই পানি পান করুন।
হজমশক্তি বৃদ্ধিতেও পানের গুণ সর্বজনবিদিত। খাওয়ার পর পান চিবোনোর প্রচলন মূলত সে-কারণেই এসেছে। এছাড়া গ্রামে অনেকে শিশুদের বদহজম দূর করতে পানের ওপর শর্ষে তেল মাখিয়ে পেটের ওপর মালিশ করে। এতে ধীরে ধীরে পেটের অ্যাসিডিটি স্বাভাবিক পর্যায়ে আসে এবং পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কার হয়। আবার পানপাতার সাথে সামান্য কাঁচামরিচ মিশিয়ে সিদ্ধ করে সেই মিশ্রণটি ছেঁকে পান করলেও বদহজমের রোগীরা সুফল পাবেন।
মুখের সমস্যায়
পানের রসে রয়েছে দাঁতের মাড়িকে মজবুত করার উপাদান। কুসুম গরম পানিতে দু’তিন ফোঁটা পানের রস মিশিয়ে কিংবা সরাসরি পানপাতাকে সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে সকাল-সন্ধ্যা কুলি করতে পারেন। পানের রস মুখের ভেতর থাকা জীবাণু এবং ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে নিশ্বাস সজীব করে তোলে। এছাড়াও মুখের যে-কোনো ক্ষত সারানোতেও বেশ কার্যকর পানের রস।
ফুসফুসের ব্যামো সারাতে
কাশি এবং শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তি পেতেও সাহায্য করবে পান। পানপাতায় শর্ষে তেল মেখে সেটি খানিকটা আগুনের ওপর সেকে নিয়ে বুকে মালিশ করলে শ্বাসকষ্টের রোগীরা বেশ ফল পাবেন। আবার দারুচিনি, এলাচ, গোলমরিচ, লবঙ্গ এবং পানপাতা একসাথে দুই কাপ পানিতে ভালো করে সিদ্ধ করে সেই পানি ছেঁকে পান করলেও কাশি এবং শ্বাসকষ্ট অনেকটাই সেরে যাবে।
কোমরের ব্যথা উপশমে
কোমরের ব্যথা উপশম করার ক্ষেত্রেও রয়েছে পানপাতার কার্যকারিতা। পানপাতা পেস্ট করে তার সাথে নারকেল তেল মিশিয়ে গরম করে কোমরে মালিশ করলে দারুণ ফল পাওয়া যায়।
মূত্রসংক্রান্ত সমস্যায়
যাদের প্রসাব করতে কষ্ট পোহাতে হয় তাদের জন্যও রয়েছে পানপাতার ওষুধ। পানপাতার রস দুধের সাথে মিশিয়ে পান করলে তা মুত্র পরিষ্কারকের কাজ করে।
ক্লান্তি এবং অবসাদ দূরীকরণে
ক্লান্ত-অবসন্ন হয়ে শরীরে ঘুম ঘুম ভাব চলে এলে পান করতে পারেন পানপাতার রসের সাথে মধুর মিশ্রণ। এতে শরীর চাঙা হয়ে পূর্ণোদ্যমে কাজ করার স্পৃহা ফিরে পাবেন।
মাথাব্যথা
মাথাব্যথা উপশমের ক্ষেত্রেও পানপাতা কাজ করে টনিকের মতো। মাথাব্যথা হলে একটি পানপাতা আপনার কপালে লাগিয়ে রাখতে পারেন। কিংবা পানপাতার পেস্ট বানিয়ে সেটিও কপালে মাখতে পারেন। কাজে দেবে।
এলার্জি, ব্রণ কিংবা খোসপাঁচড়া দূর করতে
এলার্জি, ব্রণ কিংবা খোসপাঁচড়া হলে আক্রান্ত স্থানে পানপাতার পেস্টের সাথে কাঁচা হলুদ বেটে প্রলেপ লাগাতে পারেন। এ দু’য়ের মিশ্রণ ধীরে ধীরে আপনার ত্বকের এ ধরনের বিশ্রী অসুখ সারিয়ে তুলবে।
কানের ব্যথা
কানের ব্যথা দূর করতে হলে পানপাতার রসের সাথে নারকেল তেলের মিশ্রণ বানিয়ে দু’ফোঁটা ঢেলে দিলে সুফল পাবেন।
যোনিপথে ঘা কিংবা চুলকানির ক্ষেত্রে
অনেক নারীই যথেষ্ট পরিচ্ছন্ন থাকার পরও যোনিপথে ঘা কিংবা চুলকানির মতো সমস্যার সম্মুখীন হন। তাদের জন্যও পানপাতা হতে পারে দারুণ নিরামক। পানপাতা সিদ্ধ করা কুসুম গরম পানি দিয়ে যোনীপথ পরিষ্কার করলে অস্বস্তিকর এ রোগ ভালো হয়। এছাড়াও স্বাভাবিক ঋতুকালীন সময়ে কিংবা সন্তান জন্মদানের পরও এই পানি দিয়ে যোনিপথ নিয়মিত পরিষ্কার করলে জীবাণুর সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
সতর্কতা : পানপাতার এতসব গুণ দেখে আবার নিয়মিত চুন, সুপারি, জর্দ্দা, খয়ের সহযোগে পানের সমঝদার বনে যাবেন না যেন! এতে হিতে-বিপরীত হবে। বিশেষ করে চুন এবং জর্দ্দা, খয়েরের মতো তামাকজাত দ্রব্যগুলো আপনার শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
-সাজ্জাদুর রহমান
No comments